Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

আখের জমিতে ইঁদুরের প্রতিবন্ধকতা

আখের জমিতে ইঁদুরের প্রতিবন্ধকতা
ড. মো. আমজাদ হোসেন১ ড. সমজিৎ কুমার পাল২ ড. মো. আতাউর রহমান৩


বাংলাদেশের ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পোকামাকড়ের পাশাপাশি অনিষ্টকারী মেরুদণ্ডী প্রাণী দমন করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাঠের ফসল উৎপাদন ও গুদামজাত শস্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ইঁদুর এক বড় সমস্যা। ইঁদুর মাঠের শস্য খায়, কেটে নষ্ট করে এবং গর্তে জমা করে। আখ ফসলও অনিষ্টকারী ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রেহাই পায় না।


আখ বাংলাদেশের অর্থকরী ফসলসমূহের মধ্যে অন্যতম, যা চিনি ও গুড় উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল। প্রতি বছর মিল এবং মিল বহির্ভূত এলাকায় প্রায় এক লক্ষ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়ে থাকে। শুধু চিনি বা গুড় উৎপাদনই নয়, চিবিয়ে খাওয়ার জন্যও আখের ব্যাপক চাহিদা বিদ্যমান। আখ ফসল উৎপাদনে বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যার মধ্যে হেক্টরপ্রতি মাড়াইযোগ্য আখের স্বল্পতা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, সুষম সার প্রয়োগ না করা এবং রোগ ও পোকামাকড় অন্যতম। শুধু পোকামাকড়ের কারণেই প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২০% উৎপাদন এবং প্রায় ১৫% চিনি আহরণ হ্রাস পায়। আখ রোপণ থেকে শুরু করে কর্তন পর্যন্ত ১২-১৪ মাস সময়ের প্রয়োজন হয়। এই দীর্ঘ সময়ে অনিষ্টকারী মেরুদণ্ডী প্রাণী ইঁদুর আখের জমিতে ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে কোন কোন বছর ইঁদুরের ব্যাপক আক্রমণ পরিলক্ষিত হয় এবং আখের ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।


ইঁদুর Rodentia বর্গের Muridae পরিবারের অন্তর্গত যার বৈজ্ঞানিক নাম Bandicota bengalensis। বাংলাদেশে আখ উৎপাদনকারী সকল জেলায় মাঠের কালো ইঁদুরের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে, যা বিভিন্ন সময়ে আখ ফসলে যথেষ্ট ক্ষতি করে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার শ্রীলংকা, ভারত, নেপাল, ভুটান, বার্মা, পাকিস্তান, থাইল্যান্ডসহ বহুদেশে ইঁদুরের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। মাঠের বড় কালো ইঁদুর ধরা পড়লে উচ্চঃস্বরে ফোঁস এবং কর্কশ শব্দের মাঝামাঝি অদ্ভুত ধরনের শব্দ করে এবং একই সময়ে লোম বা পশম খাঁড়া করে হুমকি প্রদর্শন করে। এরা সার্বক্ষণিক কৌতূহলী এবং অনুসন্ধানকারী স্বভাবের। এরা সবাইকে শত্রুভাবে। ইঁদুরের স্মরণ শক্তি (৬০ দিন), ঘ্রাণ শক্তিও প্রখর, জিহ্বার স্বাদ মানুষের ন্যায় (তিতা, মিষ্টি) অনুভব করতে পারে কিন্তু রং শনাক্ত করতে পারে না। পৃষ্ঠদেশের পশম স্পষ্ট ঝাঁকড়া এবং পিঠ ও পাঁজর কালচে-বাদামি হয়। পেটের লোম ক্রিম অথবা হালকা হলুদ রঙের আভা থাকে। সামনের পা এবং পিছনের পা কালো লোম দ্বারা আবৃত থাকে। আখের মাঠে বয়স্ক ইঁদুরের ওজন পুরুষ ৩১০-৯১০ গ্রাম এবং স্ত্রী ৩৭৫-৭৫০ গ্রাম পাওয়া যায়।

 


আখের মাঠে ইঁদুরের উপস্থিতির লক্ষণসমূহ
আখ কেটে খাওয়া, নখ দিয়ে আখ আঁচড়ানো, আখ বেয়ে উপরে উঠা বা নামাসহ ক্ষণস্থায়ী চিচি শব্দ শোনা যায়। আখের ক্ষেতে চলাচলের রাস্তায় ইঁদুরের মল, নোংরা দাগ, পায়ের ছাপ, ইঁদুর যাতায়াতে পথ ইত্যাদি দ্বারা ইঁদুরের উপস্থিতি চিহ্নিত করা যায়। তাছাড়া ইঁদুরের বাসা বা গর্ত, আশেপাশে ছড়ানো ছিটানো খাবার, ইঁদুরের গন্ধ ইত্যাদি থেকেও ইঁদুরের উপস্থিতি বোঝা যায়। সারা বছরই আখক্ষেতের ইঁদুর দেখা যায় তবে মার্চ-আগস্ট মাসে এদের প্রকোপ বেড়ে যায়।


আখক্ষেতে ইঁদুরের ক্ষতির প্রকৃতি
আখ মাঠে লাগানোর পরে কিংবা চারা গজানো শুরু হলেই ইঁদুরের উপদ্রব লক্ষ করা যায়। আখের ক্ষেতে গর্ত, নালা ও প্রচুর পরিমাণে মাটি তুলে আখের চারার ব্যাপক ক্ষতি করে। মাটির নিচ থেকে আখের চারার গোড়া কেটে দেয় (ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল)। মাটির নিচে ইঁদুরে কাটা আখ একটু এবড়ো-থেবড়ো হয় কিন্তু উইপোকা কাটা আখ দেখতে একেবারেই মসৃণ দেখা যায়। জুন-আগস্ট মাসে বৃষ্টি হলেই ইঁদুর আখের মাঠে কোন গর্ত না করেই মাটির ঠিক উপর থেকে আখ খেয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। গোড়ার দিক থেকে কোন আখের সম্পূর্ণ বা অর্ধেক গিরা খেয়ে ফেলে। ইঁদুরে ক্ষতিগ্রস্ত এসব আখ একটু বাতাস হলেই ভেঙে পড়ে। আখ হেলে পড়া রোধে বেঁধে দেওয়া হয়। বাঁধা অংশে ইঁদুর আশ্রয় নিয়ে মনের আনন্দে আখ খেয়ে প্রচুর ক্ষতি করে। মাঠের কালো ইঁদুর জমিতে গর্ত করে তাতে চারা গাছ কেটে জমা করে। আখের চারা একটু বড় হলেই তা কেটে দেয়। অর্ধপরিপক্ব আখ খেয়ে ক্ষত সৃষ্টি করেও প্রচুর ক্ষতি করে থাকে। আখ ফসলে ইঁদুর প্রায় ৮-১০% ক্ষতি করে থাকে।   

                                                
সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনা
ইঁদুরের মৌলিক চাহিদা যেমন-খাদ্য, পানি ও বাসস্থান সীমিত করে এদের সংখ্যা কমানো যায়। এতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি, ইঁদুর বাহিত রোগ ও পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব। ইঁদুর দমনের উপযুক্ত সময় হলো আখের জমিতে সেচ দেওয়ার দিন। আখের জমির চারপাশের আইল উঠায়ে দিয়ে প্লাস্টিকের পাইপ বা রড দ্বারা আইল তৈরি করলে ইঁদুর বাসা বাঁধার জায়গা পাবে না। এভাবে সবাই মিলে আখের জমিতে ইঁদুর আসা নিরুৎসাহিত করলে একরপ্রতি আখের উৎপাদন খরচ ৩,৫০০ টাকা কমানো সম্ভব হবে। এ ছাড়াও সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইঁদুর নিধন করা সম্ভব।
১মহাপরিচালক, বিএসআরআই, ২পরিচালক (গবেষণা),  বিএসআরআই, ৩ সিএসও এবং প্রধান, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বিএসআরআই।


ফোন : ০৭৩২৫৬৫৩৬২৮, ই-মেইল : dg-bsri.gov.bd


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon